শনিবার

আপু আমি বাসর রাতে দেখি ওর সেটা নেই……

 

বলতে পারেন আমি আপনাদের একজন নিয়মিত পাঠক,জীবন সংশ্লিষ্ট ঘটনাগুলো পড়ে মাঝেমধ্যে নিজের দুখঃ কে ভুলে থাকার চেষ্টা করি কিন্তু সবকিছু ত আর ভুলে থাকা যাই না কিছু কিছু সময় পুরনো বেদনাগুলো ব্যাপকভাবে আমাকে নাড়া দেই. আপু আমি আর সহ্য করতে পারছি না,মাঝেমধ্যে মনে হয় নিজেকে শেষ করে দিই,কিন্তু পরিবারের সম্মানের দিকে তাকিয়ে সেটা পারিনা.আমিতো চেয়েছিলাম অন্য মেয়েদের মতো একটি সুখি জীবন কিন্তু আমার কপালে এমন হলো কেন বলতে পারেন,আসলে গরীবের মেয়েদের কোন স্বাধীনতা নেই,আছে শুধুমাত্র বঞ্চনা এবং অবহেলা,আমাদের মনে তৃপ্তি আছে কিন্তু তৃষ্ণা মেটানোর সাধ্য নেই. আপু আমার বাবা একজন নিম্নমধ্যবিত্ত,ছোটবেলা থেকেই একপ্রকার কষ্টের ভিতরে বড় হয়েছি আমি এসএসসি এবং ইন্টারমিডিয়েট পরিক্ষায় জিপিএ 5 পেয়েছিলাম,এরপর আত্বীয় স্বজনদের সহযোগিতায় জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হয়, বিশ্ববিদ্যালয়ে আসার কিছুদিন পরেই আমাদের ডিপার্টমেন্টের এক ছেলে আমাকে একটি টিউশনির ব্যাবস্থা করে দেই,সেই থেকে আস্তে আস্তে আমাদের ভিতরে সম্পর্ক গড়ে ওঠে.ওর নাম রাজু,সর্ব দিক দিয়ে একজন আদর্শ ছেলে বলতে পারেন।

 

আমাদের সম্পর্ক বেশ এগিয়ে যাই আমরা কেউ কাওকে ছেড়ে কখনো থাকবো সেটা কল্পনা করিনি. আমার বাবার বেশ বয়স হয়েছে সংসার চালাতে হিমশিম খাচ্ছে,আমার ছোট আরো দুইটা ভাইবোন আছে. হঠাৎ একদিন বাড়ি থেকে আমাকে ফোন করে যশোরে আসতে বললো,আমি ঢাকা থেকে চলে গেলাম.আমি বাড়ি যাবার পরে শুনি আমার বিয়ে ঠিক হয়েছে,আমার মামারা ছেলে দেখেছেন আমার জন্য,সেই মুহুর্তে আমি কি করবো ভেবেচিন্তে কোন কুলকিনারা পাচ্ছিলাম না,আমার মা এবং মামা বললো এই বিয়ে আমাকে করতেই হবে,আমি লেখাপড়া শেষ করলে আমার সামনে উজ্জ্বল ভবিষ্যৎ,আরো অনেক কিছুই বলে আমি বাসার সবাইকে অনেক বুঝালাম কিন্তু কোন কাজ হলো না. বিয়ের পরে শ্বশুর বাড়ি থেকে নাকি পড়াশোনা করতে বাধা দিবেনা আর শ্বশুরবাড়ির লোকজন নাকি অনেক ধনী,আমাদের পরবর্তীতে কোন দরকার হলে সাহায্য করতে পারবে,মামা বললেন আমার ছোট ভাইবোনের কথা বিবেচনা করে হলেও এই বিয়েতে আমার রাজি হওয়া উচিত. ছেলের ছবি আমাকে দেখাতে চাইলো কিন্তু আমি দেখলাম না,বিয়ে অস্বীকার করার যেহেতু কোন উপায় নেই সেহেতু ছবি দেখে আর কি হবে.

 

আমি রাজুকে আর বলতে পারিনি,কারণ সবেমাত্র আমরা দ্বিতীয় বর্ষ শেষ করেছি এখন রাজুর পক্ষে বিয়ে করা সম্ভব না,তাছাড়া এইভাবে রাজু বিয়েও করবে না. যথারীতি ধুমধামে আমার বিয়ে হলো,আমার বিয়েতে শ্বশুর বাড়ি থেকে দামী গহনা শাড়ি সহ অনেক কিছুই দিয়েছিলো কিন্তু সত্যি আপু আমার মনে বিন্দুমাত্র শান্তি নেই. বিয়ের দিনেই আমি ছেলেকে দেখলাম,দেখতে ফর্সা হলেও তার আচরণ দেখে কেমন জানি মনে হলো আমার কাছে.বিয়ে শেষ হলে আমি চলে গেলাম শ্বশুর বাড়িতে,পোছাতে একটু রাত হলো. আমি শশুর বাড়িতে যাবার পরে সেই রাতে অনেকেই আমাকে দেখতে এলো সবাই যথেষ্ট হাসিখুশি কিন্তু আমি যে মোটেই শান্তি পাচ্ছিলাম না. পরবর্তীতে আমার স্বামী বাসর ঘরে এলেন,আমার স্বামীর ছোট বোন নিয়ে আসলেন উনাকে. কিন্তু আপু আমি প্রথম কথা বলতেই অবাক হলাম,আমি সেই মুহুর্তে আর নিজেকে সামলে রাখতে পারছিলাম না,প্রথমত মনে অনেক কষ্ট আর দ্বিতীয়ত এটা দেখতে হবে আমি সেটা কল্পনায় করিনি,আপু আমি বাসর রাতে দেখি ওর সেটা নেই. ও তো অনেকটা অপ্রকৃতস্থ মানে বোকাসোকা টাইপের একপ্রকারের পাগল.আপু আমি নিজের কান্না আর ধরে রাখতে পারলাম না,আমার কান্না দেখে সে ও চিতকার করে কান্নাকাটি শুরু করে পুরো বাড়ি হইচই শুরু করে দিলো

 

 

আমার শাশুড়ি আমাকে বললেন বউমা তোমাকে একটু মানিয়ে নিতে হবে করার কিছুই নেই,আমার ছেলেকে একটু দেখে রেখো.সেই থেকে আপু আমি আজ প্রায় এক বছর ছয় মাস হলো পুরো সংসার এবার স্বামী কে দেখে আসছি,আমার শাশুড়ি আমাকে বলেন পড়াশোনা করে কি হবে,এই বিশাল সম্পত্তি তো সব তোমার. আপু আমার সংসার জীবনে কোন অভাব নেই কিন্তু একটি মেয়ে বিয়ের পরে যেটা আশা করে আমি সেটা এখনো পেলাম না,জানিনা আমার এই স্বামী কবে সুস্থ হবে আর কবেই বা আমার দায়মুক্তি হবে.আপু আসলে গরীবের মেয়েদের কোন ইচ্ছে থাকতে নেই,সব ইচ্ছা একরাতেই শেষ.আমার মতো কপাল যেন আর কোন মেয়ের না হয়.আপু দোয়া করবেন আমার জন্য,আমি মানসিক ভাবে খুবই হতাশ পারলে আমাকে একটু পরামর্শ দিয়েন আমার ইনবক্সে প্লিজ. পরামর্শঃ খুব দ্রুত আপনার পরামর্শ আপনার ইনবক্সে পাঠিয়ে দেওয়া হবে

 

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন