শনিবার

আমি বিবাহিত।মিলনের কিছু দিন পর থেকে আমার যোনি চুলকায়….

 

প্রতিদিনই আপনার ডক্টর অনলাইন বাংলা স্বাস্থ্য টিপস পোর্টালের ফেসবুক ফ্যানপেজে অনেক ম্যাসেজ আসে। সব ম্যাসেজর উত্তর দেওয়া সম্ভব হয় না।তাই পাঠকদের কাছে প্রশ্নটির বিস্তারিত তুলে ধরা হয় (প্রশ্নকারীর নাম ও ঠিকানা গোপন রেখে)। আপনি ও আপনার সমস্যার কথা লিখতে পারেন অামদের ফেসবুক ফ্যানপেজে আজকের প্রশ্নঃ আমি বিবাহিত।বয়স ২১। মিলনের কিছু দিন পর থেকে আমার যোনি চুলকায়। যোনি খুব চুলকায়। জলে খুব। ফুলে যায় । মাসে একবার হয়ে থাকে।

যৌনিতে ইচিং বা চুলকানির কারণ ও প্রতিকার

আপনার ডক্টরের উত্তরঃ যোনি (ইংরেজি: Vagina – ভ্যাজাইনা; মূলতঃ লাতিন: উয়াগিনা) হলো স্ত্রী যৌনাঙ্গ, যা জরায়ু থেকে স্ত্রীদেহের বাইরের অংশ পর্যন্ত বিস্তৃত একটি ফাইব্রোমাসকুলার নলাকার অংশ। মানুষ ছাড়াও অমরাবিশিষ্ট মেরুদণ্ডী ও মারসুপিয়াল প্রাণীতে, যেমনঃ ক্যাঙ্গারু অথবা স্ত্রী পাখি, মনোট্রিম ও কিছু সরীসৃপের ক্লোকাতে যোনি পরিদৃষ্ট হয়।

শিশু হতে বয়োসন্ধিকাল পর্যন্ত নানাবিধ কারণে যোনিপথে চুলকানি হয়। বয়োসন্ধিকালের পর হতে যৌনক্ষম বয়স পর্যন্ত যোনিপথে চুলকানির কারণ অনেক কম ও ভিন্ন। তবে রোগ সংক্রামণের জীবাণুগুলো অনেকাংশে একই। যোনিপথে কিছু কিছু ভাইরাস/ব্যাকটেরিয়া স্বাভাবিকভাবেই বাস করে। স্বাভাবিক পরিবেশে এইসব ভাইরাস/ব্যাকটেরিয়া কোনো ক্ষতি করে না। তবে স্বাভাবিক পরিবেশ যখনই ব্যাহত হয় তখনই এইসব ভাইরাস/ব্যাকটেরিয়া কার্যকর হয় এবং সংক্রমণ ঘটায়। এই অপ্রতিকূল পরিবেশ ঘটে বিভিন্ন কারণে। বিশেষ করে যৌনবাহিত রোগ জীবাণু সহজেই সংক্রমণ ঘটায়। যেমন : গনোরিয়া, সিফিলিস, ফাংগাস, স্ট্রাইকোমোনাস, ব্যাকটেরয়েড, হিউম্যান প্যাপিলোমা ভাইরাস, এইডস ইত্যাদি। তবে এই সমস্ত সংক্রমণে সবক্ষেত্রে যোনিপথে চুলকানি নাও হতে পারে। তবে দুর্গন্ধযুক্ত স্রাব ও চুলকানি একসাথে থাকলে অবশ্যই বিষয়টি গুরুত্বসহকারে চিকিৎসা করাতে হবে। চুলকানি অনেক সময় পিরিয়ডের সময় হয়, অনেক সময় পিরিয়ড শেষে হয়। প্রাথমিক অবস্থায় এন্টি ফাংগাস, এন্টিহিস্টামিন ও এন্টি ফাংগাস মলম ব্যবহার করলে এই সংক্রমণ হতে রক্ষা পাওয়া যায়।

 

মেয়েদের যোনিতে বীর্যপাত করলে মেয়েরা আনন্দ পায় কি?

বড় নখ দিয়ে চুলকিয়ে অনেকে ব্যাকটেরিয়ার ক্ষত সৃষ্টি করে। সেক্ষেত্রে এন্টিবায়োটিক মলমও দিতে হবে। সঠিক সময়ে চিকিৎসা না হলে বাহ্যিক এই সংক্রমণ জরায়ুতে প্রবেশ করে যৌনাঙ্গে ইনফেকশন সৃষ্টি হবে, যা ভবিষ্যতে বিরাট সমস্যার সৃৃষ্টি করে।

প্রশ্ন হতে পারে কোন সময় সংক্রমণের ঝুঁকি বেশি? পিরিয়ডের সময়, ডেলিভারির সময় ও ডেলিভারির পরপরই। এবরশন হলে, ইচ্ছাকৃতভাবে এবরশন করালে সংক্রমণের ঝুঁকি বৃদ্ধি পায়। তবে বহুগামীÑযারা নিজে বা যাদের স্বামী, সেইসব ক্ষেত্রে ঝুঁকি আরো বেশি। তাই সংক্রমণের চিকিৎসার সাথে সাথে বহুগামিতা রোধ করতে হবে।

স্ত্রীর যোনিতে কখন যৌনাঙ্গ প্রবেশ করালে স্ত্রী আনন্দ পাবে? জেনে নিন

কিছু কিছু ক্ষেত্রে যোনিপথের বাইরে সাদা হয়ে যায় এবং চুলকানি হয়। এই উপসর্গ উক্তস্থানের ক্যান্সারের পূর্বলক্ষণ। সময়মতো চিকিৎসা না হলে সময়ের সাথে সাথে এটি ক্যান্সারে রূপ নেয়। এই সমস্যা মাসিক বন্ধের পরই বেশি দেখা যায়; তবে তার আগেও হতে পারে। তাই বেশি মাত্রায় চুলকানি হলে উক্ত স্থান চোখে দেখার প্রয়োজন আছে। ডাক্তারের পরামর্শ মতে উক্ত সাদা স্থানের biopsy report করা জরুরি। অতঃপর কারণ অনুযায়ী চিকিৎসা প্রয়োজন; যা দীর্ঘমেয়াদী মাসিক বন্ধের পর যোনিপথের স্বাভাবিক আদ্রতা ও পরিবেশের পরিবর্তন হয়। ইস্ট্রোজেন হরমোন ঘাটতি এর কারণ। যার কারণে উক্ত স্থান শুকনা ও রাফ হয়, এ থেকেও চুলকানি হয়।

যোনি থেকে সাদা স্রাব বের হয়, কি করব? পড়ুন এখানে

তাই অতিসত্ত্বর গাইনী বিশেষজ্ঞের পরামর্শ গ্রহণ করা উচিৎ। ইস্ট্রোজেন হরমোনসমৃদ্ধ মলম এখানে কার্যকর। তবে কিছু কিছু ক্ষেত্রে মানসিক কারণে, যৌন জীবনে অতৃপ্তি, পারিবারিক অস্থিরতা ও মনোমানিল্য এইসব কারণেও চুলকানি হতে পারে।

কারণ যাই হোক না কেন দৈনন্দিন জীবনের ব্যস্ততার মধ্যে এই সব সামান্য উপসর্গকে অবহেলা না করে চুলকানির কারণ খুঁজে বের করা উচিত এবং তার অতিসত্তর চিকিৎসা প্রয়োজন।

 

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন